এটি একটি কাল্পনিক গল্প। এর সব চরিত্র ও ঘটনা কাল্পনিক। যদি বাস্তবের কোন কিছুর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায় তবে তা নিছক কাকতাল মাত্র।
আমি আমার বান্ধবী এবং মানুষিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ড. জেসিকা হ্যানের অফিসে আমার সেশনে বসে আছি। আমার মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট গুলো দেখে ও বলল, “সব কিছুই তো নরমাল মনে হচ্ছে। আমি কোন হরমনাল ইম্ব্যালান্সও রিপোর্টে দেখছিনা। এমনকি সেরেটনিন, ডোপামিন লেভেলও স্বাভাবিক। তোমার আসলে কাজের চাপে এবং অফিস পলিটিক্সের কারণে অডিটরি এবং ভিসুয়াল হালুসিনেশন হচ্ছে বলে মনে হয়।”
আমি না সূচক মাথা নাড়লাম। ও বলল, “এধরনের ঘটনা আগে কখন হয়েছে?”
আমি উত্তর দিলাম, “না”।
জেসিকা বলল, ” তোমার অবচেতন মস্তিস্ক তোমাকে বিরতি নিতে বলছে। তুমি এখনকার কাজটা ছেঁড়ে দাও, নতুবা তোমাকে এই চাকরি শেষ করে ফেলবে।”
আমি বললাম: “আমি তোমাকে বোঝাতে পারবনা। আমি চেষ্টা করছি ছেঁড়ে দেয়ার কিন্তু পারছিনা। আমার মনে হয় খুব শিগগিরি আমাকে চাকরি থেকে বাতিল করা হবে। অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমার মনে হয় তা হতে দেয়াই ভাল। চাকরি থেকে ফায়ার হয়া সমস্যা নয়। আমার সুপারভাইসর আমার রেপুটেশন এবং আমার ক্যারিয়ার চিরতরে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আসিফ শুধু আমাকে সাবধান করছে যে এরকম টা হবে, আগেই প্রস্তুতি নেয়া ভালো।”
জেসিকা ঃ ” তোমার এক্স-বয়ফ্রেনড তো হয় হারিয়ে গেছে নয়ত মারা গেছে তোমার দেশে। সে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে তোমার ক্যালিফরনিয়ার এপার্টমেন্টে দেখা দিবে? তুমি হালুসিনেশনের কারণে ওকে মাঝে মাঝে দেখতে পাও। তোমার করমস্থল খুবই টকসিক তোমার মানুষিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য। আমি তোমার পরিবারের লোকজনের পুরো হেলথ হিস্ট্রি জানতে চাই। যেহেতু তুমি মেয়ে তাই তোমার আর তোমার প্যাটারনাল ডিএনএ রেসালট দরকার। আমাকে এটা বুঝতে সাহায্য করবে যে তোমার কোন স্কিযফ্রেনিক জীন আছে কিনা। এধরনের সিম্পটম অনেক সময় ফামিলিতে রান করে। সাধারণত স্কিযফ্রেনিয়ায় অডিটরি হালুসিনেশন হয়, তোমারটা মনে হয় স্পেশাল কেস।”
আমি আর কিছুই বললাম না। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললাম শুধু।
আমি এর পর যাই বলি তাই অযৌক্তিক মনে হবে। যদিও ডাক্তারের কাছে কিছু লুকাতে নেই। আমি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যদি এসব বিশ্বাস করি, তাহলে জেসিকা মনে করতে পারে আমি চাকরীর ব্যাপারটা নিয়েও বানোয়াট কথা বলেছি।
জেসিকা যোগ করলঃ ” তোমার প্রাইমারি ফিযিশিয়ানের কাছ থেকে আমি তোমার টেস্ট রিপোর্ট নিলাম। এখানে তো তোমার ভিটামিন ডি ডেফিশিয়ান্সি ছাড়া প্রায় সবই স্বাভাবিক। তুমি সত্যি কোন হালুসিনেশন রিক্রিয়েটিং ড্রাগ নিচ্ছ নাতো? আমি তোমাকে নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন কে ঠিক মাত্রায় রাখার জন্য মেডিসিন দিতে পারি। কিন্তু নিশ্চিত না হয়ে দেবনা। তোমাকে দেখে সুস্থ মনে হয়। তোমার হেলথি লাইফ স্টাইল টা তুমি মেইনটেইন কর, ছেড়ে দিয় না। তোমার ঘটনার কোন লজিকাল ব্যখ্যা আমি খুঁজে পাচ্ছিনা। তোমার সাথে আগামি সপ্তাহে আবার দেখা হবে।”
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে উঠলাম।
চলবে …
পরের পর্বের জন্য এই ব্লগে সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেননা। এই ব্লগের পাতায় নিয়মিত চোখ রাখুন…